শনিবার – ৭ই জুন, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ –  ২৪শে জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

শনিবার – ৭ই জুন, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ –  ২৪শে জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

অবশেষে ডিম দিল হালদার মা মাছ, বৈরী আবহাওয়া উপেক্ষা করে সংগ্রহ

দেশের একমাত্র প্রাকৃতিক মৎস্য প্রজনন ক্ষেত্র হালদা নদীতে অবশেষে ডিম ছেড়েছে মা মাছ। বৃহস্পতিবার (২৯ মে) মধ্যরাত থেকে নদীর বিভিন্ন অংশে ডিম সংগ্রহ শুরু করেছেন জেলেরা। এর আগে অন্তত দুই দফা নমুনা ডিম ছেড়েছিল মা মাছ।

হালদা গবেষক ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. মনজুরুল কিবরিয়া শুক্রবার সকালে বলেন, “বহুল প্রত্যাশিত হালদা নদীতে রুই জাতীয় মাছ (রুই, কাতলা, মৃগেল, কালিবাউশ) ডিম ছেড়েছে। বৃহস্পতিবার রাত প্রায় দুইটা থেকে স্থানীয় ডিম সংগ্রহকারীরা ডিম সংগ্রহ শুরু করে। প্রচণ্ড বৈরী আবহাওয়ার মধ্যেও ডিম সংগ্রহ এখনো পর্যন্ত অব্যাহত আছে। আশা করছি, এ বছর ভালো পরিমাণে ডিম পাওয়া যাবে।”

হালদা গবেষকরা জানান, প্রতি বছর এপ্রিল থেকে জুনের মধ্যে যেকোনো সময়ে হালদা নদীতে মা মাছ ডিম ছাড়ে। তবে এর জন্য কিছু প্রাকৃতিক শর্ত পূরণ হতে হয়। এর মধ্যে রয়েছে পূর্ণিমা বা অমাবস্যার তিথি বা ‘জো’ (সময়), একইসঙ্গে নদীর উজানের পাহাড়ি অঞ্চলে (খাগড়াছড়ি, মানিকছড়ি) বজ্রসহ প্রচুর বৃষ্টিপাত, যার ফলে পাহাড়ি ঢল নামে এবং নদীর পানি ফেনাযুক্ত ও ঘোলাটে হয়। ঠিক এই সময়ে পূর্ণ জোয়ার শেষে অথবা পূর্ণ ভাটা শেষে পানি যখন কিছুক্ষণের জন্য স্থির হয়, তখনই মা মাছ ডিম ছাড়ার জন্য উপযুক্ত পরিবেশ পায়।

কয়েকদিন ধরেই হালদা পাড়ের প্রায় পাঁচ শতাধিক জেলে ডিম সংগ্রহের সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়ে অপেক্ষায় ছিলেন। তবে পর্যাপ্ত বৃষ্টি না হওয়ায় নদীতে অনুকূল পরিবেশ তৈরি না হওয়ায় মা মাছ ডিম ছাড়ছিল না। অবশেষে বৃহস্পতিবার রাতে অনুকূল পরিবেশ পাওয়ায় মা মাছ পুরোপুরি ডিম ছাড়ে।

চট্টগ্রামের কর্ণফুলী নদীতে পতিত হওয়া হালদা নদী খাগড়াছড়ি জেলার বাটনাতলী পাহাড় থেকে উৎপন্ন হয়ে প্রায় ১০৬ কিলোমিটার সর্পিল পথ পাড়ি দিয়েছে। দেশের রুই জাতীয় মাছের এই অদ্বিতীয় প্রাকৃতিক প্রজনন ক্ষেত্রটির সুরক্ষায় সরকার বিভিন্ন সময়ে নানা উদ্যোগ গ্রহণ করেছে।