সাময়িক হিসাবে দেশের মানুষের মাথাপিছু আয় বেড়ে ২ হাজার ৮২০ ডলার হওয়ার তথ্য দিয়েছে রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস), যা ইতিহাসের সর্বোচ্চ। এর আগে ২০২১-২২ অর্থবছরে মাথাপিছু আয় ছিল সর্বোচ্চ ২ হাজার ৭৯৩ ডলার।
আজ মঙ্গলবার বিবিএস সাময়িক হিসাব প্রকাশ করেছে। এক বছরের ব্যবধানে এ আয় বেড়েছে ৮২ ডলার। আগের ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরে ছিল ২ হাজার ৭৩৮ ডলার। বিবিএসের এক কর্মকর্তা বলেন, রেমিটেন্স বাড়ার কারণেই মাথাপিছু আয় বেড়ে রেকর্ড হয়েছে।
মাথাপিছু আয় কোনো ব্যক্তির একক আয় নয়। দেশের অভ্যন্তরের আয়ের পাশাপাশি রেমিট্যান্সসহ যত আয় হয়, তা একটি দেশের মোট জাতীয় আয়। সেই জাতীয় আয়কে মাথাপিছু ভাগ করে এই হিসাব করা হয়।
চলতি অর্থবছরে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতির প্রবৃদ্ধির এ হার উন্নয়ন সহযোগী বিশ্ব ব্যাংক ও আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) এর পূর্বাভাসের কাছাকাছি। এর আগে সংস্থা দুটি তাদের হালনাগাদ প্রতিবেদনে চলতি অর্থবছরে প্রবৃদ্ধি ৪ শতাংশের নিচে থাকার কথা বলেছিল।
একটি দেশে সারাবছর উৎপাদিত পণ্য ও সেবা মিলিয়ে জিডিপি হিসাব করা হয়। বিবিএস বলছে, প্রাক্কলিত হিসাবে ২০২৪-২৫ অর্থবছরে বাংলাদেশের মোট জিডিপি দাঁড়িয়েছে ৪৬২ বিলিয়ন ডলার বা ৫৫ হাজার ৫২৮ বিলিয়ন টাকা (প্রতি ডলার ১২০ টাকা ২৯ পয়সা ধরে)। আগের ২০২৩-২০২৪ অর্থবছর শেষে বাংলাদেশের মোট জিডিপির আকার দাঁড়িয়েছিল ৪৫০ বিলিয়ন ডলার বা ৫০ হাজার ২৭ বিলিয়ন টাকা।
চলতি অর্থবছরের শুরুতেই সরকার পরিবর্তনের দাবিতে উত্তাল ছিল সারাদেশ। অবরোধ, সংঘাত ও ইন্টারনেট বন্ধ রাখার ঘটনায় অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড স্থবির হয়ে পড়েছিল, যার প্রভাব পড়ে অর্থনীনতিতে। যে কারণে অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে জিডিপি প্রবৃদ্ধি হয় মাত্র ১ দশমিক ৯৬ শতাংশ। আগের বছর একই সময়ে এ হার ছিল ৫ দশমিক ৮৭ শতাংশ।
সাময়িক হিসাবের ভিত্তিতে বিবিএস বলছে, ২০২৪-২৫ অর্থবছরে জিডিপির সঙ্গে বিনিয়োগের অনুপাত দাঁড়িয়েছে ২৯.৩৮ শতাংশ। আগের অর্থবছরে যা ছিল ৩০.৭০ %।
ক্ষমতার পালাবদলের পর অন্তর্বর্তী সরকার দেশের হাল ধরে। সরকার কিছুটা স্থিতিশীল হলে আন্দোলন সংগ্রামের চাপও কমতে শুরু করে। তবে বছর শেষে প্রবৃদ্ধিতে এর রেশ রয়ে যাবে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।